নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আইন বিভাগের দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত সহযোগী অধ্যাপক বাদশা মিয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া ১০০১ জন শিক্ষকের মধ্যে তার নামও রয়েছে। ফলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান, পেশাগত দায়িত্ব লঙ্ঘন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামহানির অভিযোগ নতুন করে উঠেছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নোয়াখালী জেলার সদস্য সচিব বনি ইয়ামিন ফেসবুকে দেওয়া তার পোস্টে লিখেছেন, “খুনি হাসিনার রায় প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ কুলাঙ্গার শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন নোবিপ্রবির ২ বছরের জন্য বহিষ্কৃত আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাদশা মিয়া।
ফ্যাসিস্ট শাসনামলে তিনি নিজ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করে ছাত্রত্ব কেড়ে নিয়েছেন। ৫ ই আগস্টের পর যেসব শিক্ষকরা বাদশা মিয়াদের মতো কুলাঙ্গারদের স্থান দেওয়ার জন্য শিক্ষক পরিষদ গঠন করে তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতেন তারা এখন কি বলবেন? তাহলে আপনারা কি বুঝে শুনেই লীগ পুনর্বাসনে লিপ্ত? সরাসরি গণহত্যাকে সাপোর্ট করার পরেও নোবিপ্রবি প্রশাসন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করবে না?”
তার এমন মন্তব্য সামনে আসতেই আবারও আলোচনা হচ্ছে বাদশা মিয়াকে ঘিরে পূর্বের ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে, পূর্ববর্তী শাসনামলে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে কমেন্টস করায় বহিষ্কার করে তার ছাত্রত্ব বাতিল করেছিলেন। এই অভিযোগেই তাকে দুই বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়।
নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির বর্তমান নির্বাচিত সদস্য নোমান সিদ্দিকী ইনকিলাবকে বলেন, বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো দেশের প্রচলিত আইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধির আওতায় সুস্পষ্টভাবে তদন্তযোগ্য। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩(খ) ধারায় রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী বা শৃঙ্খলাভঙ্গমূলক আচরণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ধরা হয়েছে। একই বিধিমালার ৩(ঘ) ধারা নৈতিক স্খলন ও অনৈতিক আচরণের ক্ষেত্রে স্থায়ী অপসারণ পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান দেয়।
এছাড়া নোবিপ্রবি আইন, ২০০১-এর ৫৩ ধারায় সিন্ডিকেটকে গুরুতর অসদাচরণ, দায়িত্বে অবহেলা, প্রতিষ্ঠানবিরোধী কর্মকাণ্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামহানি ঘটালে স্থায়ী বহিষ্কার পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক আচরণবিধি অনুযায়ীও কোনো শিক্ষক মানবাধিকারবিরোধী, সংবিধানবিরোধী বা সহিংসতা সমর্থনমূলক মতাদর্শের পক্ষে অবস্থান নিলে তা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
অভিযোগের বিষয়ে বাদশা মিয়া জানান তিনি এই বিষয়ে অবগত নন। সেই বিবৃতিতে উল্লেখিত রয়েছে অধ্যাপক বাদশা মিয়া কিন্তু তার পদ হলো সহযোগী অধ্যাপক। এই ঘটনায় পাল্টা বিবৃতি দেবেন না বলেও জানান তিনি।